Ostad: ভারত ও বাংলাদেশে স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কী করছে এই সংস্থা!
রিলিজ ৩৬৫ ডিজিটাল ডেস্ক: সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণে বহু পরিবর্তন এসেছে। সেই সঙ্গে বদলেছে প্রশিক্ষণের ধরণও। যে কোনো বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের ক্ষেত্রে কোভিড পরবর্তী সময়ে অফলাইন ইনস্টিটিউটের নির্ভরশীলতা বদলে গিয়েছে অনলাইনে। এর ফলে যেমন ভালো হয়েছে, তেমনই কুপ্রভাবও পড়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সমস্যা।
কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে এমনটা যে একেবারে হত না তা নয়। তবে, গোটা বিশ্ব যখন করোনা অতিমারির জেরে নাজেহাল, তখন প্রি-রেকর্ডেড কোর্সের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি যায়। হঠাৎ প্রি-রেকর্ডেড বিভিন্ন অনলাইন কোর্সের রমরমা শিক্ষার ক্ষেত্রে ওয়ান সাইডেড এনভায়রনমেন্টে তৈরি করে। সে কারণে সমস্যায় পড়েন শিক্ষার্থীরা। প্রযুক্তি প্রশিক্ষণে এই প্রি-রেকর্ডেড কোর্সের সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে আসে বাংলাদেশের এড-টেক প্লাটফর্ম ওস্তাদ (Ostad)।
সংস্থা সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে এই প্লাটফর্ম থেকে ১০ হাজার ২৩৪ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ২০২৭ সালের মধ্যে ওস্তাদের পরিকল্পনা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষকে স্কিল ডেভেলপমেন্টের আওতায় নিয়ে আসা। একইসঙ্গে, ওস্তাদ এর ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদেরকে সাথে নিয়ে লাইভে স্টাডিপ্ল্যানের মাধ্যমে কোর্স প্রোভাইড করা তাঁদের অন্যদের থেকে আলাদা করেছে বলে সংস্থাটি দাবি করেছে।
২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকেই পথচলা শুরু ওস্তাদের। ওই দেশেরই ৫ জন ইঞ্জিনিয়ার মিলে এই প্লাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এখন ওস্তাদের কোর টিমে রয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মুসাব্বির (সিইও), সৌরভ বড়ুয়া (সিওও), ফাহিম সিদ্দিক (হেড অফ প্রডাক্ট), মৃদুল খন্দকার (হেড অফ সেলস), শরিফুল ইসলাম মুবিন (সিটিও)। ওস্তাদের কোর টিম স্বপ্ন দেখছে, বাংলাদেশের বেকারত্ব শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে তাঁরা অগ্রণী ভুমিকা রাখতে পারবে।
বাংলাদেশে এড-টেক ইন্ডাস্ট্রি এখন খুব দ্রুত বড় হচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারও ক্রমাগত বেড়েছে সেকারণে, এই মার্কেট সাইজ ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ, এ বিষয়ে প্রি-রেকর্ডেড ভিডিও কোর্স সমাপ্তির হার ১০ শতাংশেরও নীচে বলে জানা গিয়েছে। ফলে, প্রযুক্তি নিয়ে সাক্ষরতা বাড়ছে না৷ ওস্তাদের দাবি, এই সমস্যা মেটাতে চাকরি প্রার্থীদের জন্য এই লাইভ লার্নিং এডুকেশন প্ল্যাটফর্ম শুরু করা হয়েছে।
এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টরাই। যেমন জাভাস্ক্রিপ্ট, ব্যাকএন্ড, ফ্রন্টএন্ড এবং ডেটাবেস নিয়ে পড়াচ্ছেন রাব্বিল হাসান রুপম। রিয়েক্ট, রিডাক্স, নেক্সট জেএস এবং প্রিজমা নিয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সুমিত সাহা। হাসিন হায়দার ওস্তাদে পিএইচপি লারাভেল এবং ভিউ জেএস নিয়ে পড়াচ্ছেন। অন্যদিকে, তামিম শাহরিয়ার সুবিন পড়াচ্ছেন কোডিং প্রবলেম সলভিং বিষয়ে। সেইসঙ্গে, আশিফুল হক প্রোডাক্ট ডিজাইন এবং শামিম হুসেইন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর কোর্স করাচ্ছেন।
ভারত এবং বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলছে বলে ওস্তাদ দাবি রাখে। তাঁদের কথায়, প্ল্যাটফর্মের লাইভ লার্নিং এবং ইন্টারেক্টিভ কোর্সের পাঠ্যক্রমের কারণে ২০২৩ জুলাই পর্যন্ত কোর্স সমাপ্তির হার ৮৮ শতাংশ। নতুন দক্ষতা বিকাশের পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শীর্ষ শিল্প পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করানোও উদ্দেশ্য এই প্লাটফর্মের। উচ্চতর কোর্স সমাপ্তির হার সহ ওস্তাদ সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যেও সফল হয়েছে বলে কোর টিমের সদস্যরা দাবি করেছেন।
লাইভে স্টাডি প্ল্যানের মাধ্যমে পড়ানো হচ্ছে এই প্লাটফর্মে। প্রতিদিনের প্রগ্রেস আমরা ট্র্যাক করার পাশাপাশি, কুইজ, এসাইনমেন্ট এবং লাইভ টেস্টের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে এসেসমেন্ট করা হয়। চলতি মাস পর্যন্ত ‘ওয়েব ডেভলপমেন্ট উইথ লারাভেল অ্যান্ড পিএইচপি’ (Web Development With Laravel and PHP) ওস্তাদে সর্বাধিক এনরোল হওয়া কোর্স। কমবেশি সমস্ত কোর্স অফারে বাংলাদেশি ৬ হাজার টাকা মূল্য রয়েছে। ভারতের শিক্ষার্থীদের জন্য একই কোর্স ভারতীয় সাড়ে ৪ হাজার টাকার একটু বেশি পড়বে। চলমান কোর্সগুলি এই লিংকে https://ostad.app/courses গিয়ে এনরোল করা যাবে।
ওস্তাদের মার্ন ১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফয়জাল আজম সিদ্দিকী জানান, কোর্সটি স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। আমার প্রতিটি সমস্যাই শিক্ষকরা লাইভ ক্লাসেই সলভ করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও সাপোর্ট ইন্সট্রাক্টররাও খুবই ভালো ছিলেন। সমস্ত কিছু মিলিয়ে মার্ন (MERN) এর লার্নিং জার্নি আমার জন্য ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন কোর্সে পড়ছেন এমন একাধিক শিক্ষার্থীরাও একইরকম মন্তব্য করেছেন।
কোর্সের প্রশিক্ষক শামিম হুসেইন বলেন, ওস্তাদ টিম কমিটমেন্ট ঠিক রাখার জন্য যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। সার্ভিসের দিক থেকে তাঁদের ডেডিকেশন চোখে পড়ার মতন। আরেকটি কোর্সের প্রশিক্ষক রাব্বিল হাসান রুপম জানান, সঠিকভাবে ওস্তাদের ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভলপমেন্ট উইথ মার্ন (Full Stack Web Development with MERN) কোর্সটি শেষ করতে পারলে একজন শিক্ষার্থী তার ক্যারিয়ারের জার্নিতে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ যেমন শুরু করতে পারবে, তেমনই এগিয়ে যাবে আরো অনেক দূর।
সংস্থার হয়ে নওরিন জাহান দিশা বলেন, আমাদের ভিশন এবং মোটিভেশন আমাকে কাজের প্রতি অনেক অনুপ্রানিত করে। সেইসঙ্গে গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে কোর্সের লার্নারদের ক্যারিয়ারে হেল্প করার বিষয়টি আমাকেও কাজের সাথে লেগে থাকতে মোটিভেট করে। ওস্তাদের এক ফ্রন্টএন্ড ডেভেলপার আমানুল্লাহ রাফি জানান, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার মানসিকতা প্রোডাক্টকে নিয়ে যাচ্ছে অন্য উচ্চতায়। এই টিমের সাথে থেকে এমন প্রোডাক্ট বিল্ড করতে পেরে আমি উচ্ছসিত।